যা বলতেই হবে
আজ ১৩ এপ্রিল পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন
নোবেলজয়ী এক সাহসি জার্মান লেখক গুন্টার
গ্রাস। এক অসাধারন প্রতিভাবান লেখক যিনি তার
লেখায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন সাহসিকতার
সাথে। যিনি জোড়ালো কন্ঠে সমালোচনা করেছেন
পশ্চিমাদের অন্যায় যুদ্ধ নীতির।
২০১২ সালে গুন্টার গ্রাস ইসরাইল আর পশ্চিমাদের
সমালোচনা করে ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ নামের
একটি গদ্য-কবিতা লেখেন।
অন্য দিগন্তে পাওয়া সায়ীদ আবুবকর অনুদিত
কবিতাটি নিম্নরূপ:
যা বলতেই হবে
কেনই বা নীরব থেকেছি এতকাল, করেছি কেবলি
ইতস্তত
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার বিষয়ে, যে খেলা প্রকাশ্যে খেলেই
চলেছে সব বিশ্বময়,
যে খেলার শেষে আমাদের যারা টিকে
থাকবে সভ্যতার
শুধু পাদটীকা হয়ে?
এটা তো প্রথম আঘাতের অভিযুক্ত অধিকার,
যা ধ্বংস করে দেবে পুরোপুরি ইরানি জাতিকে,
যাকে পরাভূত করতে চায়একটি উচ্চকণ্ঠ,
তার সাথে এসে মিলিত হয়েছে তার সাঙ্গপাঙ্গরা,
কারণ তার ক্ষমতার
চৌহদ্দির মধ্যে তারই বিরুদ্ধে বানানো হয়ে যেতে
পারে একটি অ্যাটোম বোমা।
তার পরও আমি কেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগি সেই দেশের
নাম নিতে, যে ইতোমধ্যে
বানিয়ে ফেলেছে পারমাণবিক বোমা যদিও তা
আড়াল করে রাখা হয়েছে
পৃথিবীর নজর থেকে তার সেই ক্রমবর্ধমান শক্তির
ওপর কারো হস্তক্ষেপ নেই,
যাচাই-বাছাই করার কোনো ব্যাপারও নেই,
নেই পৃথিবীর মোড়লদের তদন্ত করে দেখার
মাথাব্যথাও।
এইসব বিষয়ের প্রতি সাধারণ নীরবতা, যার সামনে
আমার নিজেরই নীরবতা
নুয়ায়ে দিয়েছে তার শির, আমার কাছে মনে
হয়েছে একটি সমস্যা উদ্রেককারী
চাাপিয়ে দেয়া মিথ্যে, যা টেনে নিয়ে চলেছে
বিশ্বকে একটি শাস্তির দিকে,
ইহুদিবিরোধী মতবাদ তাতে ফুঁসে উঠতে পারে
সহজেই।
কিন্তু আমার নিজের দেশই, যাকে তার অতীতের
অপরাধকর্মের জন্য
প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে বারবার, সেই কিনা যখন
আরেকটি সাবমেরিন
সরবরাহ করে বসে ইসরাইলে (যেটা কিনা স্রেফ
ব্যবসায়িক লেনদেন
ছাড়া কিছু নয়, যদিও বলা হয়েছে যুদ্ধের
ক্ষতিপূরণস্বরূপ দেয়া হচ্ছে
ইসরাইলকে), এমন একটি রাষ্ট্রকে, যার অঢেল ক্ষমতা
রয়েছে আণবিক
যুদ্ধ চালানোর এমন এক জনপদে যেখানে একটিও
অ্যাটোম বোমা আছে
বলে প্রমাণিত হয়নি আজও, তাদের ভীতবিহ্বল
অস্তিত্বই প্রমাণ করে
দেয় তা, তখন আমাকে বলতেই হবে আমি যা বলতে
চাই আজ।
কিন্তু কেন আমি নীরব হয়ে আছি আজও?
তার কারণ, আমার মূল উৎস, যা মলিন হয়ে হয়ে গেছে
এমন এক রঙে, যা কিছুতেই মুছে ফেলা যাবে না;
তার অর্থ হলো, আমি কখনো প্রত্যাশা করিনি
ইসরাইল,
যার সাথে আমি সংশ্লিষ্ট থেকেছি সারা জীবন,
তার বিরুদ্ধে
এমন একটি সত্য প্রকাশিত হয়ে যাক।
তা হলে কেন এখন, যখন আমি বৃদ্ধ, আমাকে বলতে
হচ্ছে :
ইসরাইলের পারমাণবিক শক্তি বিপন্ন করে তুলেছে
ভঙ্গুর বিশ্বশান্তিকে?
কারণ আমাকে এ বলতেই হবে
কারণ আগামীকাল আমার জন্য ফিরে নাও আসতে
পারে
কারণ একজন জার্মান হিসেবে আমি খুবই
ভারাক্রান্ত
যখন একটি অপরাধের জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছি
আমরা
যার দ্বারা সমস্যার সমাধান হবে না কিছুই, বরং
বাড়বে।
আমি আমার নীরবতা ভেঙে বের হয়ে এসেছি
কারণ পাশ্চাত্যের ভণ্ডামি আমাকে অসুস্থ করে
ফেলেছে
এবং আমি আশা করি আমার মতো আরো অনেকেই
বের হয়ে আসবেন
নীরবতা ভেঙে
এবং আশা করি আমরা যারা প্রকাশ্য বিপদের
মুখোমুখি, তারা দাবি জানাবেন
না, কোনো শক্তি প্রয়োগ নয়
দাবি জানাবেন যে, ইরান ও ইসরাইল উভয়ই
আন্তর্জাতিক শক্তিকে অনুমতি দিক উভয় দেশের
আণবিক শক্তি ও
সামর্থ্য বিষয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত
করার।
বাহিরের কোনো ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতাই
ইসরাইল কি প্যালেস্টাইনের জন্য
কিংবা তাদের জন্য যারা শত্র“তার মধ্যে বাস করে
তাদের চারপাশে
এমনকি আমাদের কারো জন্য শান্তি বয়ে আনবে না,
আমি নিশ্চিত।
নোবেলজয়ী এক সাহসি জার্মান লেখক গুন্টার
গ্রাস। এক অসাধারন প্রতিভাবান লেখক যিনি তার
লেখায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন সাহসিকতার
সাথে। যিনি জোড়ালো কন্ঠে সমালোচনা করেছেন
পশ্চিমাদের অন্যায় যুদ্ধ নীতির।
২০১২ সালে গুন্টার গ্রাস ইসরাইল আর পশ্চিমাদের
সমালোচনা করে ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ নামের
একটি গদ্য-কবিতা লেখেন।
অন্য দিগন্তে পাওয়া সায়ীদ আবুবকর অনুদিত
কবিতাটি নিম্নরূপ:
যা বলতেই হবে
কেনই বা নীরব থেকেছি এতকাল, করেছি কেবলি
ইতস্তত
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার বিষয়ে, যে খেলা প্রকাশ্যে খেলেই
চলেছে সব বিশ্বময়,
যে খেলার শেষে আমাদের যারা টিকে
থাকবে সভ্যতার
শুধু পাদটীকা হয়ে?
এটা তো প্রথম আঘাতের অভিযুক্ত অধিকার,
যা ধ্বংস করে দেবে পুরোপুরি ইরানি জাতিকে,
যাকে পরাভূত করতে চায়একটি উচ্চকণ্ঠ,
তার সাথে এসে মিলিত হয়েছে তার সাঙ্গপাঙ্গরা,
কারণ তার ক্ষমতার
চৌহদ্দির মধ্যে তারই বিরুদ্ধে বানানো হয়ে যেতে
পারে একটি অ্যাটোম বোমা।
তার পরও আমি কেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগি সেই দেশের
নাম নিতে, যে ইতোমধ্যে
বানিয়ে ফেলেছে পারমাণবিক বোমা যদিও তা
আড়াল করে রাখা হয়েছে
পৃথিবীর নজর থেকে তার সেই ক্রমবর্ধমান শক্তির
ওপর কারো হস্তক্ষেপ নেই,
যাচাই-বাছাই করার কোনো ব্যাপারও নেই,
নেই পৃথিবীর মোড়লদের তদন্ত করে দেখার
মাথাব্যথাও।
এইসব বিষয়ের প্রতি সাধারণ নীরবতা, যার সামনে
আমার নিজেরই নীরবতা
নুয়ায়ে দিয়েছে তার শির, আমার কাছে মনে
হয়েছে একটি সমস্যা উদ্রেককারী
চাাপিয়ে দেয়া মিথ্যে, যা টেনে নিয়ে চলেছে
বিশ্বকে একটি শাস্তির দিকে,
ইহুদিবিরোধী মতবাদ তাতে ফুঁসে উঠতে পারে
সহজেই।
কিন্তু আমার নিজের দেশই, যাকে তার অতীতের
অপরাধকর্মের জন্য
প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে বারবার, সেই কিনা যখন
আরেকটি সাবমেরিন
সরবরাহ করে বসে ইসরাইলে (যেটা কিনা স্রেফ
ব্যবসায়িক লেনদেন
ছাড়া কিছু নয়, যদিও বলা হয়েছে যুদ্ধের
ক্ষতিপূরণস্বরূপ দেয়া হচ্ছে
ইসরাইলকে), এমন একটি রাষ্ট্রকে, যার অঢেল ক্ষমতা
রয়েছে আণবিক
যুদ্ধ চালানোর এমন এক জনপদে যেখানে একটিও
অ্যাটোম বোমা আছে
বলে প্রমাণিত হয়নি আজও, তাদের ভীতবিহ্বল
অস্তিত্বই প্রমাণ করে
দেয় তা, তখন আমাকে বলতেই হবে আমি যা বলতে
চাই আজ।
কিন্তু কেন আমি নীরব হয়ে আছি আজও?
তার কারণ, আমার মূল উৎস, যা মলিন হয়ে হয়ে গেছে
এমন এক রঙে, যা কিছুতেই মুছে ফেলা যাবে না;
তার অর্থ হলো, আমি কখনো প্রত্যাশা করিনি
ইসরাইল,
যার সাথে আমি সংশ্লিষ্ট থেকেছি সারা জীবন,
তার বিরুদ্ধে
এমন একটি সত্য প্রকাশিত হয়ে যাক।
তা হলে কেন এখন, যখন আমি বৃদ্ধ, আমাকে বলতে
হচ্ছে :
ইসরাইলের পারমাণবিক শক্তি বিপন্ন করে তুলেছে
ভঙ্গুর বিশ্বশান্তিকে?
কারণ আমাকে এ বলতেই হবে
কারণ আগামীকাল আমার জন্য ফিরে নাও আসতে
পারে
কারণ একজন জার্মান হিসেবে আমি খুবই
ভারাক্রান্ত
যখন একটি অপরাধের জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছি
আমরা
যার দ্বারা সমস্যার সমাধান হবে না কিছুই, বরং
বাড়বে।
আমি আমার নীরবতা ভেঙে বের হয়ে এসেছি
কারণ পাশ্চাত্যের ভণ্ডামি আমাকে অসুস্থ করে
ফেলেছে
এবং আমি আশা করি আমার মতো আরো অনেকেই
বের হয়ে আসবেন
নীরবতা ভেঙে
এবং আশা করি আমরা যারা প্রকাশ্য বিপদের
মুখোমুখি, তারা দাবি জানাবেন
না, কোনো শক্তি প্রয়োগ নয়
দাবি জানাবেন যে, ইরান ও ইসরাইল উভয়ই
আন্তর্জাতিক শক্তিকে অনুমতি দিক উভয় দেশের
আণবিক শক্তি ও
সামর্থ্য বিষয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত
করার।
বাহিরের কোনো ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতাই
ইসরাইল কি প্যালেস্টাইনের জন্য
কিংবা তাদের জন্য যারা শত্র“তার মধ্যে বাস করে
তাদের চারপাশে
এমনকি আমাদের কারো জন্য শান্তি বয়ে আনবে না,
আমি নিশ্চিত।
কোন মন্তব্য নেই